যাদের জন্য ক্ষতিকর অ্যাপল সিডার ভিনেগার-যাদের খাওয়া নিষেধ-WHEN NOT TO TAKE APPLE CIDER VINEGAR (ACV)

তিন ধরনের ব্যাক্তির অ্যাপল সিডার ভিনেগার গ্রহণ করা অনুচিত। ১।আলসার সমস্যায় আক্রান্ত ব্যাক্তিদের ২।গ্যাস্ট্রাইটিস সমস্যা থাকলে ৩।জলিঞ্জার এলিসন সিন্ড্রম থাকলে কিন্তু,শারীরিকভাবে সুস্থ্য মানুষ নিয়মিত অ্যাপল সিডার ভিনেগার গ্রহণ করলে অনেক স্বাস্থ্য উপকারীতা আছে। যেমনঃ ১. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে:বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার খাওয়া শুরু করলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা প্রায় ৩১ শতাংশ কমে যায়। তবে এতসব উপকার পেতে এক মাস অন্তত এই পানীয়টি খেতে হবে। এখন প্রশ্ন হল, ডায়াবেটিসের মতো রোগকে দূরে রাখতে কীভাবে পান করতে হবে এই ভিনিগার? এক্ষেত্রে রাতে শুতে যাওয়ার আগে ২৫০ এমএল জলে ২ টেবিল চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে পান করতে হবে। তাবেই মিলবে উপকার। ২. ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে:ডাক্তারের পরামর্শ মতো অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারকে যদি রোজের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তাহলে কিন্তু বাস্তবিকই ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। আসলে এই পানীয়টিতে (apple cider vinegar weight loss drink)উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র এমন খেল দেখায় যে খিদে কমে যেতে শুরু করে। আর কম পরিমাণে খাওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে সময় লাগে না। তবে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে শুধু এই পানীয়টি খেলে কিন্তু তেমন একটা উপকার মিলবে না। ফল তখনই পাবে, যখন শারীরিক পরিশ্রম করার পাশাপাশি এই পানীয়টি পান করা শুরু করবে। ৩. হার্ট চাঙ্গা থাকবে:নিয়মিত পরিমাণ মতো জলে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে পান করা শুরু করলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরের মাত্রা যেমন কমতে শুরু করে, তেমনি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে রক্তচাপ এবং ট্রাইগ্লিসারাইডও। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। ৪. মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়:মুখগহ্বরে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের মাত্রা বৃদ্ধি পেলেই মূলত দুর্গন্ধ বেরতে শুরু করে। আর ঠিক এই কারণেই তো এমন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ব্যবহার করার প্রয়োজন রয়েছে। আসলে নিয়মিত এক গ্লাস জলে পরিমাণ মতো ভিনিগার মিশিয়ে গার্গেল করা শুরু করলে ক্ষতিকর জীবাণুরা সব মারা পরে (apple cider vinegar cures)। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মুখ থেকে বদ গন্ধ বেরনোর আশঙ্কা আর থাকে না বললেই চলে! ৫. শরীরকে বিষ মুক্ত করে:একথা জানা আছে কি সারা দিন নানাভাবে বিষাক্ত উপাদানেরা সব আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। আর এই সব টক্সিক উপাদানদের যদি ঠিক সময় শরীর থেকে বের করে দেওয়া না যায়, তাহলে কিন্তু মহা বিপদ! কিন্তু প্রস্ন হল এই কাজটি করবে কীভাবে? এক্ষেত্রে প্রতিদিন জল এবং অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে পান করতে হবে। এমনটা করলে শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদানেরা সব বেরিয়ে যাবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও যাবে কমে। ৬. ব্রণর প্রকোপ কমবে:এই বিশেষ ধরনের ভিনিগারটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যাসেটিক অ্যাসিড, সেই সঙ্গে মজুত রয়েছে ল্যাকটিক, সুসেনিক এবং সাইট্রিক অ্যাসিড, যা ব্রণ সৃষ্টিকারি ব্যাকটেরিয়াদের দ্রুত মেরে ফেলে। ফলে ব্রণর মতো ত্বকের রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারে উপস্থিত ল্যাকটিক অ্যাসিডের কারণে যে কোনও ধরনের দাগ মিলিয়ে যেতেও সময় লাগে না। অল্প দিনেই ত্বক উজ্জ্বল এবং অপূর্ব সূন্দর হয়ে উঠুক, এমনটা যদি চান, তাহলে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারের (apple cider vinegar and skin)সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে দেরি করবেন না! ব্রণর প্রকোপ কমাতে সম পরিমাণে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার এবং জল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ বানিয়ে নিতে হবে। তারপর একটা তুলো সেই মিশ্রণে চুবিয়ে যেখানে যেখানে ব্রণ হয়েছে, সেখানে আলতে করে লাগিয়ে দিতে হবে। এরপর ১০ মিনিট অপেক্ষা করে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা। প্রসঙ্গত, নিয়মিত এই টোটকাটিকে কাজে লাগালেই দেখবেন ফল মিলতে শুরু করেছে। ৭. ট্যান কমবে নিমেষে:রোদে ঘুরে ঘুরে কি চামড়া গেছে পুড়ে? তাহলে তো এখনই ত্বকের পরিচর্যায় কাজে লাগাতে হবে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারকে। কারণ জল এবং ভিনিগারটি মিলিয়ে তৈরি মিশ্রনটির সাহায্যে ত্বকের ষত্ন নিলে হারিয়ে যাওয়া স্কিন টোন ফিরে আসতে সময় লাগবে না। সেই সঙ্গে ত্বকের প্রদাহও কমবে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই নানাবিধ ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যাবে কমে। প্রসঙ্গত, এতসব উপকার পেতে হাফ কাপ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারের সঙ্গে ৪ কাপ জল মিশিয়ে একটি মিশ্রন বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রণটি ধীরে ধীরে ত্বকের পুড়ে যাওয়া অংশে লাগাতে হবে। কিছু সময় অপেক্ষা করার পর ধুয়ে ফেলতে হবে জায়গাটা। এইভাবে নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা করলে দেখবে উপকার মিলতে সময় লাগবে না। ৮. স্কিন টোনার হিসেবেও কাজে আসে:নিয়মিত টোনার হিসেবে এই ভিনিগারটিকে কাজে লাগালে একদিকে যেমন ত্বকের "পিএইচ" লেভেল ঠিক থাকবে, তেমনি স্কিনের জমতে থাকা ময়লাও সব ধুয়ে যাবে। সেই সঙ্গে ত্বকের অন্দরে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে স্কিন টোনের উন্নতি ঘটবে। শুধু তাই নয়, স্কিনের উজ্জ্বলতাও বাড়বে চোখে পরার মতো। এক্ষেত্রে সম পরিমাণে জল এবং অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে যে মিশ্রণটি তৈরি হবে, তাতে তুলো চুবিয়ে ধীরে ধীরে সারা মুখে লাগাতে হবে। কিছু সময় পরে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা। ৯. চুলের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসে:শীতকাল মানেই ত্বকের পাশাপাশি চুলের আদ্রতাও যাবে কমে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হেয়ার ফলের মাত্রা তো বাড়বেই, সেই সঙ্গে চুলে জট এবং ড্রাই স্ক্যাল্পের মতো সমস্যাও লেজুড় হতে পারে। এমনকি বাড়তে পারে খুশকির প্রকোপও। কিন্তু যদি চান তাহলে এই সব সমস্যা থেকে কিন্তু দূরে থাকতে পারেন। তবে তার জন্য চুলের যত্নে কাজে লাগাতে হবে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারকে, তাহলেই দেখবেন কেল্লা ফতে! আসলে এই বিশেষ ধরনের ভিনিগারটি চুল এবং স্ক্যাল্পের আদ্রতা যাতে কমে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখে।

Comments